বাজেটে তৈরি পোশাক রফতানি প্রণোদনায় বরাদ্দ ২৮২৫ কোটি টাকার প্রস্তাব।খুশি নন(বিজিএমইএ).

তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবারের ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে।

এ খাতে প্রণোদনা দিতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে আরও দুই হাজার ৮২৫ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।

জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, “তৈরি পোশাক শিল্পের রফতানিতে বিশ্বে আমরা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছি। বৈশ্বিক বাণিজ্যের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি একটি বিকাশমান সম্ভাবনাময় খাত। এ বিবেচনায় আমাদের সরকার এ খাতটির জন্য বিদ্যমান নগদ প্রণোদনাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে তৈরি পোশাক রফতানির চারটি খাতে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। তৈরি পোশাক রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরে তৈরি পোশাক রফতানির অবশিষ্ট সব খাতে ১ শতাংশ হারে রফতানি প্রণোদনা দেয়ার প্রস্তাব করছি।“

এছাড়া উত্থাপিত বাজেটে একই সঙ্গে তৈরি পোশাক শিল্প ও টেক্সটাইল খাতে বিদ্যমান হ্রাসকৃত করহার সুবিধা অব্যাহত রাখারও প্রস্তাব করা হয়েছে।

তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পে হ্রাসকৃত আয়কর সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়ে বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে আয়কর হার ১২ শতাংশ। তবে গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন থাকলে এ হার ১০ শতাংশ। এছাড়া টেক্সটাইল খাতে আয়কর হার ১৫ শতাংশ। এ খাত দুটি অনেক বছর ধরে হ্রাসকৃত আয়কর সুবিধা ভোগ করে আসছে। চলতি বছরের ৩০ জুন এ সুবিধার মেয়াদ শেষ হবে। দেশের অর্থনীতিতে, বিশেষ করে রফতানি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে খাত দুটির অবদান বিবেচনায় আমি হ্রাসকৃত করহারের এ সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করছি।

বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে বিকালেই এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিজিএমইএ নেতারা।

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ইতিবাচক বললেও খুশি নন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে দেওয়া প্রণোদনা পোশাক খাত টিকিয়ে রাখতে সহায়ক নয়।

অর্থনীতিবিদরা শুধু বলেন, পোশাক খাত পরিপক্ক। আমি বলবো, আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পোশাক খাত এখনো শিশু অবস্থায় রয়েছে। দয়া করে গতানুগতিক কথা বলবেন না। তাই এ খাত টিকিয়ে রাখতে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে।

রুবানা হক বলেন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে গবেষণা নেই। বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ নেই, দক্ষ জনশক্তি নেই। বিশ্ববাজারে কিভাবে টিকে থাকবো ৪৫ শতাংশ দক্ষ শ্রমিক নিয়ে? এ খাতকে টিকিয়ে রাখতে বাজেটে বিজিএমইএ এর প্রস্তাবনা সুবিবেচনার অনুরোধ করছি।

রুবানা জানান, বিজিএমইএ আটটি পণ্যে ‘সেফটি ইকুইপমেন্ট’ চাইলেও তার পাঁচটিতেও পাওয়া নিয়েও হতাশ তিনি।

“আমরা এক্সাম্পশন চেয়েছিলাম। ওয়াসায় , পানি বিদ্যুতে শতভাগ এক্সাম্পশন এসেছে, সেজন্য কৃতজ্ঞ। আটটি পণ্যে সেফটি ইকুইপমেন্ট চেয়েছিলাম, দেওয়া হয়েছে ৫টিতে। মনে করি, বাকিগুলোতে দিলে ভালো হত আমাদের জন্য।”

যোগাযোগ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোকে স্বাগত জানিয়ে রুবানা বলেন, “শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য উৎসাহ দেবে। ইনফ্রাস্ট্রাকচার কমিউনিকেশনের জন্য খুব দরকার। আগে কমিউনিকেশন বাজেট ছিল ৫৩ হাজার ৮১০ কোটি টাকা, সেখানে এবার ৬১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা। আমরা মনে করি, এটিও আমাদের জন্য ভালো দিক। বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।”

ভ্যাট ও কাস্টমস আইনে সাংঘর্ষিক জায়গা যত দ্রুত সম্ভব দূর করার প্রতিশ্রুতি আসায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে বিজিএমইএ।

আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে স্ক্যানার ব্যবহারের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে রুবানা বলেন, “আমাদের পোশাক খাতে স্বচ্ছতা আসুক, আমরা সে নিশ্চয়তা চাই। আমরা মনে করি, অনেক রকম দুর্নাম থেকে আমাদের অব্যাহতি দেবে।”

ব্যাংক ঋণে সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনতে সরকারের ঘোষণা দ্রুত কার্যকরের আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি।

 

2 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here