যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, চীন থেকে আমদানি করা শত শত বিলিয়ন ডলার পণ্যের ওপর শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা বেশকিছু পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক বসিয়েছে।
বেইজিং অভিযোগ করেছে, অর্থনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে এ নিয়ে অভিযোগও করেছে।
এদিকে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরুর পর দু-তিন মাস ধরে বাড়তি ক্রয়াদেশ নিয়ে বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে আসছে মার্কিন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান।
প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, চীন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ওপর বাড়তি শুল্কারোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রের অনেক নতুন ক্রেতা বাংলাদেশে আসছেন। পুরোনো ক্রেতারাও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্রয়াদেশ বাড়িয়েছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
গত জানুয়ারি মাসে সোলার প্যানেল আমদানিতে ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার মধ্য দিয়ে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে ৬ জুলাই ৩ হাজার ৪০০ কোটি

ডলারের চীনা পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। গত মাসে ২০ হাজার কোটি ডলার মূল্যমানের চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে দেশটি। আগামী বছরের শুরুর দিকে এই শুল্কহার বেড়ে ২৫ শতাংশ হতে পারে। এর বিপরীতে ৬ হাজার কোটি ডলার মূল্যমানের মার্কিন পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে চীন।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করে চীন। অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, চীন গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজার ৭০৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের মোট পোশাক আমদানির ৩৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ১ হাজার ৭২৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ০৪ শতাংশ কম।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একক বৃহৎ বাজার যুক্তরাষ্ট্র। রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই বাজারটিতে পোশাক রপ্তানি কমে যায়। দীর্ঘ ১৫ মাস পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে এই বাজারে পোশাক রপ্তানি ঘুরে দাঁড়ায়। গত আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) বাজারটিতে ৩৬৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ বেশি।